যুক্তরাষ্ট্রের এবারের নির্বাচন অতীতের যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে অদ্ভুত হচ্ছে সে কথা আগেই বলেছি। কিন্তু কেন হচ্ছে অদ্ভুত, সে প্রশ্নের উত্তর জানতে একটু খোঁজ-খবর নিলে একটি মত খুব স্পষ্ট করেই মিললো যে, এবারের নির্বাচনে নানা বর্ণ আর জাতির ভোটার হবে অতীতের যে কোনো বছরের চেয়ে বেশি।
হিসপ্যানিকদের মধ্যে তরুণরা, যাদের জন্মই হয়েছে এই যুক্তরাষ্ট্রে, তাদের মধ্যে ভোটার সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে।
একটি বিশ্লেষণ ঠিক এভাবে দেখাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে ভোটার হওয়ার যোগ্য অর্থাৎ ১৮ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকের ডেমোগ্রাফিটাই পাল্টে গেছে। গোটা দেশে এখন ভোটার হওয়ার যোগ্য নন-হিসপ্যানিক শেতাঙ্গ ১৫ কোটি ৬০ লাখ আর জাতিগত সংখ্যালঘু সম্ভাব্য ভোটার ৭ কোটি। নন-হিসপ্যানিক শেতাঙ্গ ভোটার ২০১২ সালে ছিলো মোট ভোটারের ৭১ শতাংশ, যা এ বছর কমে ৬৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ফলে জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভোটারের যোগ্যতা বেড়ে হয়েছে ৩১ শতাংশ।
ভোটার হওয়ার দৌড়ে বর্ণ ও জাতিগত সংখ্যালঘুর চেয়ে নন-হিসপ্যানিকদের পিছিয়ে পড়ার একটি কারণ হিসাবে দেখা গেছে, এদের মধ্যে বয়স্কদের সংখ্যা বেশি। আর ধীরে ধীরে তাদের মৃত্যু হচ্ছে। একদিকে যেমন ভোটাররা চলে যাচ্ছেন পরলোকে, অন্যদিকে নতুন যারা ভোটার হচ্ছেন, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী যাদের বয়স ১৮ বছর হয়ে যাচ্ছে তাদের মধ্যেও নন-হিসপ্যানিক শেতাঙ্গ কমছে। ২০১২ থেকে ২০১৬ এই সময়ের মধ্যে যে ১ কোটি ৬০ লাখ নতুন ভোটার হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে যার মধ্যে ৫৭ শতাংশ নন-হিসপ্যানিক শেতাঙ্গ। আর বাদ-বাকি জাতিগত সংখ্যালঘু নতুন ভোটার ৪৩ শতাংশ।
আরেকটি হিসাব অভিবাসীদের মধ্যে যারা নাগরিকত্ব পেয়ে যাচ্ছেন তারাও এই বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখছেন।
তবে ভোটার যতই বাড়ুক আর ভোটাধিকারও নিশ্চত হোক, একটি বিষয় সব সময়ই থেকে যায় তা হচ্ছে, ভোট দিতে কতজন সেন্টারে যাবে। আর বিশ্লেষণগুলো দেখাচ্ছে হিসপ্যানিক ও এশীয়দের মধ্যেই এই সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম। তবে ভোট দেওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে। ২০১২ সালের নির্বাচনে নন-হিসপ্যানিক ভোটারদের ৬৪ শতাংশ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন, সেবছর কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে ভোট দেন ৬৭ শতাংশ। আর সে তুলনায় হিসপ্যানিকরা ভোট দিয়েছন ৪৮ শতাংশ আর এশীয় ভোটারদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ গেছেন ভোট কেন্দ্রে।
এ বছর কি ভোটাররা কেন্দ্রে যাবেন? অনেকেই মনে করছেন যাবেন। যার প্রবণতা আগাম ভোটে চোখে পড়ছে।
আগাম ভোটের সপ্তাহ এখন পার করছে যুক্তরাষ্ট্র। আর প্রায় ৫৯ লাখ মানুষ তাদের ভোট দিয়েছে। জর্জিয়া, নেভাডা, নর্থ ক্যারোলিনায় আগাম ভোটের ৯০ শতাংশ কিংবা তারও বেশি কাস্ট হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এটিকে একটি নাটকীয় পরিবর্তন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এটি যুক্তরাষ্ট্রর নির্বাচনে ভোটগ্রহণের একটি প্রক্রিয়া। ভোটাররা চাইলে ভোটের দিনের আগেই ব্যক্তিগতভাবে হাজির হয়ে ভোট দিয়ে আসতে পারেন। আর অনেক রাজ্যেই এটি জনপ্রিয়।
আরেকটি প্রক্রিয়ায় ভোট নেওয়া শুরু হয়েছে, তা হচ্ছে রিটার্ন ব্যালট। এতে দেশের বাইরে যে ভোটাররা থাকেন তারা ই-মেইলের মাধ্যমে ভোট দিতে পারেন। ২০১২ সালের তুলনায় এই ভোটে রিপাবলিকানদের অংশগ্রহণ কমেছে। সে বছরেরর তুলনায় ২০১৬ সালে রিটার্নড ব্যালট পৌঁছেছে ১৩ শতাংশ কম।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৬
এইচএ/এমএমকে/
আরও পড়ুন
*** আবহাওয়া ঠাণ্ডা, ভোটের হাওয়া কী গরম!
***অদ্ভুত এক নির্বাচনের দেশে!
***প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাভার করতে বাংলানিউজ’র মেনন যুক্তরাষ্ট্রে